ইতালিতে গাজা-পন্থী বিক্ষোভের সহিংস রূপ: ৬০ পুলিশ আহত, আটক অনেকে

ইতালিতে গাজা-পন্থী বিক্ষোভের সহিংস রূপ: ৬০ পুলিশ আহত, আটক অনেকে

ইতালির রোম এবং মিলানে গাজা-পন্থী বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠেছে। রেল চলাচল বন্ধ, রাস্তায় যানজট, পুলিশ জল কামান ব্যবহার করেছে। অনেক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে, ৬০ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মী আহত।

Italy: ইসরায়েল এবং গাজার মধ্যে চলমান সংঘাতের জেরে ইতালিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রোম এবং মিলান সহ বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীরা সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের প্রধান উদ্দেশ্য গাজার সমর্থনে যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো এবং ফিলিস্তিনের অধিকারের জন্য আওয়াজ তোলা।

বিক্ষোভ চলাকালীন পরিস্থিতি

মিলান শহরে বিক্ষোভকারীরা কালো পোশাক পরে সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনে হামলা চালিয়েছে। হাতে লাঠি এবং ধোঁয়া বোমা নিয়ে আসা বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর পাথর ও বোতল ছুড়েছে। এর পাশাপাশি স্টেশন এবং আশেপাশের সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। সহিংস সংঘর্ষের কারণে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে এবং বন্দরগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ

সহিংস বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে জল কামান ব্যবহার করেছে। রোম এবং মিলান শহরে ১০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে, অন্যদিকে ৬০ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা শহরের প্রধান সড়ক এবং রেলওয়ে স্টেশনে অবরোধ করেছে, যার ফলে সাধারণ জনজীবন ব্যাহত হয়েছে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির অবস্থান

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন যে সরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। তবে, বিক্ষোভ ক্রমাগত চলছে এবং তার নেতৃত্বের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। নেপলস এবং অন্যান্য বন্দর শহরগুলিতে বাণিজ্য ও সরবরাহ প্রভাবিত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং বিতর্ক

ফিলিস্তিনকে এ পর্যন্ত ১৫২টি দেশ একটি জাতি হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে ভারত, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রিটেন এবং সৌদি আরব অন্তর্ভুক্ত। তবে, ইসরায়েল, আমেরিকা, ইতালি, জাপান এবং আরও কিছু দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি। সম্প্রতি ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং পর্তুগালও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছিল।

বিক্ষোভের কারণ

ইতালিতে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের প্রধান কারণ সরকারের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং গাজায় চলমান সংঘাতে নিষ্ক্রিয় থাকা বলে মনে করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েল এবং গাজার সংঘাত নিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছে এবং সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে যাতে তারা আন্তর্জাতিক স্তরে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

অর্থনৈতিক ও জনজীবনে প্রভাব

সহিংস বিক্ষোভের কারণে রেলওয়ে এবং বন্দর পরিষেবাগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। মিলান এবং রোমের রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে, এবং রাস্তায় যানজটের কারণে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বন্দর শহর নেপলস-এ বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রভাবিত হচ্ছে।

বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জল কামান এবং বল প্রয়োগ করেছে। অনেক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে এবং আহত পুলিশ কর্মীদের চিকিৎসা চলছে। প্রশাসন নিরাপত্তা বাড়িয়েছে যাতে সহিংসতা এবং বড় আকারের ক্ষতি রোধ করা যায়।

Leave a comment