মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলা থেকে একটি দুঃখজনক এবং মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক নীলাংশু চতুর্বেদীর বাড়িতে কর্মরত ২৪ বছর বয়সী এক যুবতী নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে, এবং পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
পারিবারিক চাপ আত্মহত্যার কারণ হতে পারে
ঘটনাটি সাতনার চিত্রকূট থানা এলাকার। মৃত সুমন নিষাদ তার মায়ের সাথে বিগত কয়েক বছর ধরে প্রাক্তন বিধায়ক নীলাংশু চতুর্বেদীর বাড়িতে কাজ করতেন। পুলিশ সূত্রে খবর, সুমনের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল এবং সম্প্রতি তিনি ফোনে কারও সাথে কথা বলতেন। এই নিয়ে বাড়িতে অনেকবার বিবাদ হয়েছে। পুলিশের ধারণা, পারিবারিক চাপ বা ব্যক্তিগত কোনো কারণে সুমন এই চরম পদক্ষেপ নিয়ে থাকতে পারেন।
প্রাক্তন বিধায়কের স্ত্রীর লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে যে পিস্তল দিয়ে সুমন আত্মহত্যা করেছেন, সেটি প্রাক্তন বিধায়কের স্ত্রীর নামে লাইসেন্স করা। এই ঘটনাটি বাড়ির ভেতরেই ঘটেছে, যা পুরো পরিবার এবং আশেপাশের এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। খবর পেয়েই পুলিশ দল, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
সাতনার পুলিশ সুপার আশুতোষ গুপ্ত জানিয়েছেন, এই বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত চলছে। তিনি আরও জানান, সুমনের মা এবং প্রাক্তন বিধায়কের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যাতে আত্মহত্যার আসল কারণ স্পষ্ট করা যায়।
প্রাক্তন বিধায়ক নীলাংশু চতুর্বেদীর রাজনৈতিক জীবন
নীলাংশু চতুর্বেদী কংগ্রেসের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০১৮ সালে সাতনা জেলার চিত্রকূট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমবারের মতো বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০২৩ সালেও একই আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি চিত্রকূটের স্বনামধন্য চৌবে রাজ পরিবারের সদস্য এবং তাকে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জন প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে, এখন তার বাড়িতে এই আত্মহত্যার ঘটনায় তার নামও আলোচনায় এসেছে।
পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে
বর্তমানে চিত্রকূট পুলিশ এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে এবং যুবতীর আত্মহত্যার পেছনের কারণগুলো খতিয়ে দেখছে। পুলিশ প্রযুক্তিগত প্রমাণ, ফোন রেকর্ড, পারিবারিক পটভূমি এবং অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলো বিবেচনা করে ঘটনার প্রতিটি দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছে।
এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের জন্য দুঃখজনক নয়, সমাজের জন্যও একটি চিন্তার বিষয় যে মানসিক চাপ এবং ব্যক্তিগত সমস্যা কিভাবে একজন যুবককে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে।