পোশাক নিয়ে অনিরুদ্ধাচার্যের মন্তব্যের নিন্দা বেবীরানী মৌর্যের

পোশাক নিয়ে অনিরুদ্ধাচার্যের মন্তব্যের নিন্দা বেবীরানী মৌর্যের

উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী বেবীরানী মৌর্য কথক অনিরুদ্ধাচার্যের মেয়েদের পোশাক নিয়ে করা বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, সাধুদের আধ্যাত্মিকতার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত, মেয়েরা তাদের শালীনতা সম্পর্কে জানে।

Aniruddhacharya Statement: উত্তর প্রদেশের রাজনীতি এবং সামাজিক অঙ্গনে আজকাল কথক অনিরুদ্ধাচার্যের নাম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর দেওয়া একটি বিতর্কিত মন্তব্য শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ নয়, সরকারের উচ্চপদস্থ নেতাদেরও প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য করেছে। রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বেবীরানী মৌর্য এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে 'অনিরুদ্ধাচার্যের তাঁর কথার সীমা বোঝা উচিত এবং তাঁর উপদেশ শুধুমাত্র আধ্যাত্মিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।'

ক্যাবিনেট মন্ত্রীর কড়া বার্তা

ঝাঁসিতে মিডিয়ার সাথে কথা বলার সময় বেবীরানী মৌর্য বলেন যে সাধু ও কথকরা সমাজকে পথ দেখানোর কাজ করেন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা নিজেরাই যদি বিতর্কিত এবং ব্যক্তিগত মন্তব্য করেন তবে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন: 'আধ্যাত্মিক মঞ্চে বসে থাকা ব্যক্তির সমাজের মেয়েদের পোশাকের উপর মন্তব্য না করে তাদের অনুপ্রাণিত করা উচিত। এটা আধুনিক যুগ, মেয়েরা তাদের শালীনতা বোঝে। তাদের কাউকে বলার দরকার নেই।'

‘পোশাকের উপর মন্তব্য অনুচিত’

মন্ত্রী আরও যোগ করেন যে কারও পোশাক তার সংস্কৃতি বা শালীনতার একমাত্র মাপকাঠি হতে পারে না। আজকের যুব প্রজন্ম শিক্ষা, কর্মজীবন এবং আত্মনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আধুনিকতার মানে এই নয় যে ঐতিহ্য ত্যাগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে অনেক সময় মেয়েদের কলেজ বা পেশাদার পরিবেশের সাথে মানানসই পোশাক পরতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে কোনও কথকের তাদের উপর মন্তব্য করা উচিত নয়।

মন্তব্য থেকে ক্ষোভ

অনিরুদ্ধাচার্যের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। মহিলা সংগঠনগুলি এটিকে নারী সম্মানের উপর আঘাত বলে অভিহিত করেছে। রাজ্য মহিলা কমিশনও বিষয়টি আমলে নিয়েছে এবং এর ব্যাখ্যা চেয়েছে।

মৌর্য বলেন, 'এ ধরনের মন্তব্য মেয়েদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। তাদের মনে হয় যে সমাজে এখনও তাদের স্বাধীনতা নিয়ে পুরনো ধ্যান-ধারণা বিদ্যমান।'

অনিরুদ্ধাচার্যের ক্ষমা প্রার্থনা

ক্রমবর্ধমান বিতর্ক এবং রাজনৈতিক চাপ দেখে অনিরুদ্ধাচার্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। তিনি বলেন যে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না কাউকে আঘাত করা। তবে অনেক সামাজিক সংগঠনের মতে, 'শুধুমাত্র ক্ষমা চাওয়াতেই বিষয়টি শেষ হয় না, ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য আসা উচিত নয়।'

সাধুদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

এই পুরো বিতর্কের পর সমাজে একটি নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে—ধর্মীয় উপদেশ দেওয়া সাধুদের সামাজিক সমস্যা নিয়ে ব্যক্তিগত মতামত রাখা উচিত কিনা? অনেক সমাজ বিশ্লেষকের মতে, সাধুদের কাজ হল সমাজকে একত্রিত করা এবং ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দেওয়া, বিভাজনমূলক মন্তব্য করা নয়।

মহিলা সুরক্ষা বনাম শালীনতা নিয়ে বিতর্ক

অনিরুদ্ধাচার্যের মন্তব্যের পর থেকে এটাও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে সমাজে মহিলাদের সুরক্ষার দায়িত্ব কেন তাদের পোশাকের উপর চাপানো হয়? অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মেয়েদের তাদের পোশাকের ভিত্তিতে বিচার করা শুধুমাত্র পুরনো ধ্যান-ধারণা নয়, আধুনিক গণতান্ত্রিক সমাজের মৌলিক চেতনার পরিপন্থীও বটে।

Leave a comment