ছত্তিশগঢ়ের রাজধানী রায়পুরে সুদখোরি, ব্ল্যাকমেলিং এবং অবৈধ অর্থ আদায়ের মতো গুরুতর মামলায় জড়িত কুখ্যাত তোমর ব্রাদার্স - বীরেন্দ্র তোমর এবং রোহিত তোমর - আবারও আদালতে হাজির হননি। এই অনুপস্থিতির কারণে রায়পুর আদালত কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে দুজনকে পলাতক ঘোষণা করেছে। আদালতের নির্দেশে পুলিশের আবেদনের শুনানি করে ঘোষণা জারি করা হয়েছে এবং ১৮ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে যে, তারা যদি হাজির না হন, তাহলে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
৬৬টির বেশি মামলা নথিভুক্ত

রায়পুর পুলিশের মতে, বীরেন্দ্র ও রোহিত তোমর গত ৪৪ দিন ধরে পলাতক এবং তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৬টির বেশি ফৌজদারি মামলা রুজু হয়েছে। এই মামলাগুলির মধ্যে সুদখোরি, মারধর, হুমকি, ব্ল্যাকমেলিং, অস্ত্র আইন এবং অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের মতো অপরাধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, তাদের গ্রেপ্তারের পরোয়ানা আগেই জারি করা হয়েছিল এবং ১৪ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার নোটিশও তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল, তবুও তারা দুজনেই অনুপস্থিত ছিলেন।
পরিবারের বহু সদস্য জেলে

তোমর পরিবারের অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগেও বেশ কয়েকজন সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন একজন পুত্রবধূ, এক ভাইপো, একজন প্রতিবন্ধী সদস্য, দুজন আইনজীবী এবং দুজন কর্মচারী, যাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, রোহিত তোমরের স্ত্রী ভাবনা তোমরকেও মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ভাবনা তার স্বামীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, কিন্তু সে বিষয়ে কোনো তথ্য গোপন করেছেন। শুধু তাই নয়, ভাবনা নিজেও সুদখোরি ও ব্ল্যাকমেলিং চক্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন - এমন প্রমাণ পুলিশের হাতে এসেছে।
এর পাশাপাশি, পুলিশ তোমর ব্রাদার্সের একটি জাগুয়ার গাড়ি রায়পুরের বিধানসভা থানা এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে এবং সেটি জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটি উদ্ধারের ফলে পলাতক আসামিদের অবস্থান এবং নেটওয়ার্ক সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন
এই পুরো ঘটনায় এখন প্রশ্ন উঠছে, তোমর ব্রাদার্সকে আসলে কারা সাহায্য করছে? সূত্র মারফত জানা গেছে, শাসক দলের কয়েকজন নেতা এবং একজন শীর্ষস্থানীয় আইপিএস অফিসার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই পলাতক আসামিদের আশ্রয় দিচ্ছেন। এই অভিযোগের পর রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বেড়েছে।
কংগ্রেস সরকার এর তীব্র সমালোচনা করেছে। দলের নেতাদের অভিযোগ, রাজস্থান থেকে আসা তোমর ভ্রাতৃদ্বয় ছত্তিশগঢ়ের নাগরিকদের অর্থনৈতিক ও মানসিক শোষণ করছে এবং বিজেপি সরকার তাদের পূর্ণ সমর্থন যোগাচ্ছে। কংগ্রেস আরও বলছে যে, বিজেপি অপরাধীদের সহযোগী হয়ে উঠেছে এবং বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করছে।
গ্রেপ্তার পুলিশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ
তোমর ভাইদের গ্রেপ্তার করা এখন রায়পুর পুলিশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদালতের কড়া মনোভাব সত্ত্বেও, দুই আসামি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমতাবস্থায়, গোটা রাজ্যের নজর এখন সেদিকেই যে পুলিশ তাদের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে পারে কিনা, নাকি আদালতকে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করার নির্দেশ দিতে হবে।
এই হাই-প্রোফাইল মামলায় প্রতিদিন নতুন মোড় আসছে এবং ভবিষ্যতে এর সঙ্গে জড়িত আরও বড় ধরনের তথ্য প্রকাশ্যে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশ ও আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে এখন গোটা রাজ্যের নজর রয়েছে।













