ফ্রি রুটি-তরকারি, মিষ্টিও! বর্ধমানের মন্দিরে বিধায়কের অনন্য উদ্যোগ

ফ্রি রুটি-তরকারি, মিষ্টিও! বর্ধমানের মন্দিরে বিধায়কের অনন্য উদ্যোগ

ভক্তদের জন্য বিনামূল্যে রাতের আহার

রুটি, কুমড়োর ছক্কা, বাঁধাকপির তরকারি, বোঁদে, আর শেষে মিষ্টি রসগোল্লা—এমন রাজকীয় রাতের ভোজে খরচ কত জানেন? একেবারেই ফ্রি! কলকাতা থেকে অল্প দূরত্বেই বর্ধমানের কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দিরে শুরু হয়েছে এই অভূতপূর্ব ব্যবস্থা।

বিধায়ক খোকন দাসের বিশেষ পরিকল্পনা

বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের উদ্যোগে সোমবার রাত থেকে চালু হয়েছে এই রাত্রিকালীন খাবারের পরিষেবা। রাত আটটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত দর্শনার্থী এবং এলাকার মানুষ পাচ্ছেন রুটি-তরকারি একেবারে বিনামূল্যে। কোনও কুপন কাটার দরকার নেই, নেই কোনও জটিল প্রক্রিয়া।

দিনে ১০ টাকায়, রাতে একেবারে ফ্রি

এতদিন পর্যন্ত কাঞ্চন নগরের কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দিরে দিনে মাত্র ১০ টাকায় ভরপেট ভাত-ডাল-তরকারি মিলত। রবিবার মেনুতে থাকত পোলাও, পায়েস, কখনও বা পনির। এবার সেই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হলো রাতের খাওয়া। তবে এখানে খাওয়ার জন্য এক টাকাও খরচ করতে হবে না।

প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা

খোকন দাস জানিয়েছেন, প্রতিদিন রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা মন্দিরে আসেন। তাঁরা ভোগের কুপন কাটেন দিনে। তবে অনেক দরিদ্র মানুষ আছেন যাঁদের পক্ষে সেই সামান্য টাকাটুকুও দেওয়া সম্ভব হয় না। তাঁদের কথা ভেবেই রাতের বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার

বিধায়ক খোলাখুলি বলেন, ‘‘দিনে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু রাতে অনেকেই নিরন্ন থাকেন। তাই ভাবলাম, অন্তত রাতে যেন কেউ না খেয়ে না শুয়ে পড়েন।’’ সেই ভাবনা থেকেই ট্রাস্টি বোর্ড রাতের বিনামূল্যে আহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উদ্বোধনে প্রশাসনের উপস্থিতি

সোমবার রাতেই আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক অমিয় দাস। তিনিই প্রথম দিনে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেন। তাঁর মতে, ‘‘এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। অসংখ্য দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবেন।’’

মেশিনে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত রুটি-তরকারি

খাওয়ার মান নিয়েও যথেষ্ট খেয়াল রাখা হয়েছে। মেশিনে রুটি-তরকারি তৈরি হচ্ছে একেবারে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে। অল্প সময়েই তৈরি হচ্ছে প্রচুর রুটি। ফলে খেতে আসা মানুষদের অপেক্ষাও করতে হচ্ছে না বেশি। বিধায়কের আশা, কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতিদিন কতজন আসবেন তার একটা ধারণা তৈরি হবে।

দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটল

প্রথম দিনের উদ্যোগেই প্রচুর মানুষ ভিড় জমিয়েছেন মন্দির চত্বরে। কারও চোখে খুশির ঝিলিক, কারও মনে একটুকরো স্বস্তি। রুটি, তরকারি, মিষ্টি পেয়ে যেন একবেলার চিন্তামুক্তি মিলেছে তাঁদের। সমাজের দুর্বলতম অংশের পাশে দাঁড়িয়ে প্রকৃত অর্থেই মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিধায়ক খোকন দাস।

 

Leave a comment