ওড়িশার বালেশ্বরে অবস্থিত ফকীর মোহন মহাবিদ্যালয়ের এক ছাত্রী, উৎপীড়ন থেকে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মঘাতী হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে এইমস, ভুবনেশ্বরে ভর্তি করা হয়েছিল, যেখানে সোমবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর রাজ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
Odisha Bandh 2025: ওড়িশার বালেশ্বর জেলার ফকীর মোহন কলেজের এক ছাত্রীর যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার ঘটনা এখন রাজ্যের রাজনীতিকে সম্পূর্ণভাবে উত্তপ্ত করে তুলেছে। চিকিৎসার সময় ছাত্রীর মৃত্যুর পর এই বিষয়টি ক্রমাগত বাড়ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, কংগ্রেসের নেতৃত্বে রাজ্যের আটটি বিরোধী দল ১৭ই জুলাই ওড়িশা বনধের ডাক দিয়েছে। বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, মহিলাদের সুরক্ষায় সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পুরো ঘটনাটি কী?
বালেশ্বরের ফকীর মোহন (স্বায়ত্তশাসিত) কলেজের এক ছাত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে কলেজের এক অধ্যাপক তাকে যৌন নির্যাতন করেছেন, কিন্তু বহুবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও কলেজ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই উদাসীন মনোভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রীটি কলেজ চত্বরেই নিজেকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ছাত্রীকে গুরুতর অবস্থায়, শরীরের ৯৫% পোড়া অবস্থায় এইমস, ভুবনেশ্বরে ভর্তি করা হয়েছিল, যেখানে তিন দিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলির আক্রমণ
ওড়িশা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভক্ত চরণ দাস এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন, এই হৃদয়বিদারক ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে ওড়িশায় মহিলারা নিরাপদ নন। তিনি বলেন, যখন ছাত্রীটি পেট্রোল নিয়ে আসে, তখন সবাই তামাশা দেখছিল, কেউ তাকে বাধা দেওয়ার বা সাহায্য করার চেষ্টা করেনি। ভক্ত চরণ দাস আরও বলেন যে রাজ্য সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তাই ছাত্রীকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য বাম দলসহ ৮টি বিরোধী দল ১৭ই জুলাই ওড়িশা বনধের ডাক দিয়েছে।
রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
ওড়িশার রাজ্যপাল হরি বাবু কম্ভমপতি ছাত্রীর মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, "এটি কেবল একটি দুঃখজনক ঘটনা নয়, বরং আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার স্তরের উপর গুরুতর প্রশ্ন তোলে।" তিনি তাঁর এক্স (পূর্বের টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, "এই ঘটনা আমাদের ক্যাম্পাসগুলিতে নিরাপত্তা এবং সংবেদনশীলতার তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে।"
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও, সরকার কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষা বিভাগের প্রধানকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।