रक्षाबंधन কেবল একটি পর্ব নয়, বরং সনাতন সংস্কৃতির সেই গল্পগুলোর জীবন্ত প্রতীক, যেখানে প্রেম, সমর্পণ এবং রক্ষার বন্ধন জন্ম নেয়। 2025 সালে रक्षाবন্ধনের मौके জেনে নিন সেই চারটি পৌরাণিক ঘটনা, যেখানে দেবী-দেবতা এবং মানবিক অনুভূতি रक्षाসূত্রকে दिव्य করে তুলেছে।
रक्षाबंधन 2025: এইবার 9 আগস্ট পালিত হবে এবং প্রতি বছরের মতো এইবারও ভাই-বোনের সম্পর্কের বাঁধনে বাঁধা এই উৎসবকে ঘিরে বিশেষ উৎসাহ রয়েছে। কিন্তু रक्षाबंधन কেবল একটি সামাজিক প্রথা নয়, বরং এর শিকড় সনাতন ধর্মের গভীর পৌরাণিক ঐতিহ্যতে বিদ্যমান। শ্রীকৃষ্ণ ও দ্রৌপদী থেকে শুরু করে যমরাজ ও যমুনা পর্যন্ত, এই উৎসবের এমন অনেক ধর্মীয় কাহিনী রয়েছে যা দর্শায় যে রাখি কেবল ভাইয়ের কব্জিতে বাঁধা একটি সুতো নয়, বরং এটি এমন একটি সংকল্প যা প্রেম, বিশ্বাস এবং রক্ষার অনুভূতিকে চিরস্থায়ী করে তোলে।
দ্রৌপদী এবং শ্রীকৃষ্ণ: যখন আঁচল হলো রক্ষা সূত্র
মহাভারতের কাহিনীতে রাখির ভাবকে সবচেয়ে আবেগপূর্ণ রূপে দেখা যায়। যখন শ্রীকৃষ্ণ শিশুপাল বধের সময় সুদর্শন চক্র চালান, তখন তাঁর আঙুল কেটে যায়। দ্রৌপদী দ্রুত তাঁর শাড়ির একটি অংশ ছিঁড়ে নিয়ে তাঁর ক্ষতে বেঁধে দেন। এই বাঁধন কেবল কাপড়ের টুকরো ছিল না, বরং একটি অদৃশ্য রক্ষা-সূত্রে পরিণত হয়েছিল। কৃষ্ণ এটিকে নিজের উপর নেওয়া সংকল্প মনে করেন এবং যখন দ্রৌপদী বস্ত্রহরণের সময় অপমানিত হচ্ছিলেন, তখন শ্রীকৃষ্ণ সেই সুতোর মর্যাদা রেখে তাঁর সম্মান রক্ষা করেন।
এই ঘটনাটি দেখায় যে रक्षाबंधन শুধু ভাই-বোনের সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং যখন সত্যিকারের অনুভূতি দিয়ে কেউ রক্ষার সংকল্প নেয়, তখন ভগবানও তার মর্যাদা রক্ষা করেন।
ইন্দ্র এবং ইন্দ্রাণী: যখন পত্নীত্বের উদ্ভূত শক্তি বিজয়ের কারণ হয়
আরেকটি পৌরাণিক কাহিনী দেবরাজ ইন্দ্র এবং তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণীর। অসুরদের সাথে চলা ঘোর যুদ্ধে যখন ইন্দ্র পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে, তখন ইন্দ্রাণী একটি মন্ত্র-সংস্কৃত সুতো তৈরি করে শ্রাবণ পূর্ণিমার দিনে ইন্দ্রের কব্জিতে বাঁধেন।
এই সুতো তাঁদের বিশ্বাস, প্রেম এবং রক্ষার কামনার প্রতীক ছিল। এর পরে ইন্দ্র যুদ্ধে জয়লাভ করেন। এই কাহিনীটি দেখায় যে रक्षासूत्रের সম্পর্ক কেবল ভাই-বোনের মধ্যেই নয়, বরং প্রতিটি সেই সম্পর্কে হতে পারে যেখানে সমর্পণ ও বিশ্বাসের অনুভূতি থাকে।
বামন অবতার, রাজা বলি এবং লক্ষ্মীর रक्षाबंधन
যখন ভগবান বিষ্ণু বামন রূপে রাজা বলির কাছে তিন পা ভূমি চান এবং বলি তাঁর সবকিছু দান করে দেন, তখন বিষ্ণু তাঁকে পাতাললোকের অধিপতি করেন। বিষ্ণুকে বলির প্রতিশ্রুতি অনুসারে পাতালেই থাকতে হয়েছিল।
এতে চিন্তিত হয়ে লক্ষ্মী মাতা ব্রাহ্মণী নারীর রূপ ধারণ করে বলির কাছে যান এবং রক্ষা-সূত্র বেঁধে ভাই পাতান। বলি খুশি হয়ে বর চান যে বিষ্ণু যেন তাঁর সঙ্গেই থাকেন।
এই কাহিনী রাখির সেই গভীর অনুভূতিকে প্রকাশ করে, যেখানে একজন দেবীও প্রেম এবং সম্পর্কের মাধ্যমে তাঁর স্বামীকে ফিরে পান। এই গল্প থেকে এই বার্তা পাওয়া যায় যে রাখি কেবল রক্ষার নয়, বরং সম্পর্ককে জোড়ারও বন্ধন।
যমরাজ এবং যমুনা: যখন বোন অমরত্বের আশীর্বাদ দিলেন
যমরাজ ও যমুনার কাহিনী রাখির মূল ভাবকে আরও গভীরতা দেয়। বহু বছর ধরে যমরাজ তাঁর বোন যমুনার সাথে দেখা করতে যাননি। যখন তাঁরা মিলিত হন, তখন যমুনা তাঁকে খাবার খাওয়ান এবং রাখি বাঁধেন। এই স্নেহ ও প্রেমে সন্তুষ্ট হয়ে যমরাজ বর দেন যে যে ভাই তাঁর বোনের কাছ থেকে ভালোবেসে রাখি বাঁধবে এবং তাঁর রক্ষার সংকল্প নেবে, সে দীর্ঘজীবী হবে।
এই কাহিনী কেবল रक्षाबंधन-এর শুরুয়াত হিসেবেই ধরা হয় না, বরং এটিও প্রমাণ করে যে এই উৎসবের প্রভাব মৃত্যুর দেবতাকেও স্পর্শ করতে পারে।
रक्षाबंधन: শুধু পরম্পরা নয়, এক সনাতন প্রতীক
এই চারটি ধর্মীয় কাহিনী থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে रक्षाबंधन শুধু একটি প্রথা নয়, বরং এমন একটি ঐতিহ্য যা আত্মিক বন্ধন, শ্রদ্ধা এবং রক্ষার সংকল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে কেবল রক্তের সম্পর্ক জরুরি নয়, বরং অনুভূতির গভীরতা এবং সত্যতা দিয়ে তৈরি প্রতিটি সম্পর্ক এই রক্ষা সূত্রের সাথে যুক্ত হতে পারে।
শ্রীকৃষ্ণ থেকে শুরু করে যমরাজ পর্যন্ত, প্রতিটি কাহিনী বলে যে रक्षाबंधन একটি ঈশ্বর-সম্মত সংকল্প, যা সময়, স্থান এবং পরিস্থিতির ঊর্ধ্বে গিয়ে জীবনের প্রতিটি সম্পর্ককে পবিত্র করে তোলে।