এ বার ট্রাম্পের নিশানায় সাংবাদিক, দিলেন চাকরি বদলের পরামর্শ

এ বার ট্রাম্পের নিশানায় সাংবাদিক, দিলেন চাকরি বদলের পরামর্শ

প্রশ্ন শুনেই মেজাজ হারালেন প্রেসিডেন্ট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেজাজ যেন দিন দিন আরও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে উঠছে। হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন বিশ্বের সংবাদমাধ্যম। পোল্যান্ডের এক সাংবাদিক ভারতের উপরে নতুন করে চাপানো ট্যারিফ ইস্যুতে প্রশ্ন তুলতেই আচমকাই রেগে আগুন হয়ে ওঠেন ট্রাম্প।

ভারতের উপর ট্যারিফ, রাশিয়া নিয়ে নীরব কেন?

সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল যথেষ্ট কূটনৈতিক। তিনি জানতে চান, যদি ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে শাস্তি পায় এবং তার ফলস্বরূপ আমেরিকা ট্যারিফ চাপায়, তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ কেন করছে না আমেরিকা? এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের মুখে এক মুহূর্তের অস্বস্তি ফুটে ওঠে। তিনি প্রশ্নটিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেন এবং আরও ক্ষুব্ধ সুরে সাংবাদিককে আক্রমণ করেন।

চাকরি বদলের পরামর্শ ট্রাম্পের

প্রশ্ন পছন্দ না হওয়ায় ট্রাম্প সরাসরি সাংবাদিককে থামিয়ে দেন। সবার সামনে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, “তুমি অন্য কোনও কাজ খুঁজতে শুরু করো।” অর্থাৎ তিনি প্রকাশ্যে সাংবাদিকের যোগ্যতা এবং পেশাদারিত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই হতবাক হয়ে যান, আর সেই সাংবাদিকও অনিচ্ছাসত্ত্বেও চুপ হয়ে যান।

বারবার সাংবাদিকদের সঙ্গে সংঘাত

ট্রাম্পের এই ধরনের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। আগেও বহুবার তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নকারীর উপর চড়াও হয়েছেন। কঠিন বা অস্বস্তিকর প্রশ্ন এলে তিনি হঠাৎই রেগে যান, কখনও প্রশ্ন এড়িয়ে যান, আবার কখনও সরাসরি অপমান করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের অনেক অভিজ্ঞ সাংবাদিকই এর আগে তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। এ কারণে হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক বৈঠক প্রায়শই উত্তেজনা এবং বিতর্কে ভরে ওঠে।

অভিযুক্ত হচ্ছেন স্বচ্ছতার অভাবে

বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছে, ট্রাম্প যেসব প্রশ্নে অস্বস্তি বোধ করেন, সেগুলি এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই সাংবাদিকদের প্রতি আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। তাঁর বিরোধীদের দাবি, এভাবেই তিনি প্রকৃত স্বচ্ছতা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন এবং গণতান্ত্রিক প্রশ্নোত্তরের পরিবেশ নষ্ট করছেন। অন্যদিকে তাঁর সমর্থকেরা বলছেন, ট্রাম্প নিজের মতো করে সোজাসাপ্টা উত্তর দেন, আর তাই অনেক সময় তা বিতর্ক তৈরি করে।

আন্তর্জাতিক মহলে চর্চা

ভারতের উপর চাপানো ট্যারিফ নিয়ে আগে থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা হচ্ছিল। এবার সেই ইস্যুতেই সাংবাদিককে প্রকাশ্যে ‘চাকরি বদলের’ পরামর্শ দিয়ে ট্রাম্প নতুন করে বিতর্ক উসকে দিলেন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, রাশিয়া প্রসঙ্গে আমেরিকার দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন শুনে ট্রাম্পের অস্বস্তি বেড়ে যায়, তাই তিনি প্রতিক্রিয়া সামলাতে না পেরে সাংবাদিককে অপমান করেন।

কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রভাব

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধু সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর আঘাত নয়, বরং কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও চাপ তৈরি করতে পারে। ভারত ইতিমধ্যেই ট্যারিফ ইস্যুতে ক্ষুব্ধ। তার মধ্যে ট্রাম্পের রাশিয়া প্রসঙ্গ এড়ানো আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ফলে সাংবাদিককে অপমান করার ঘটনাটি ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং বৃহত্তর ভূরাজনীতির এক প্রতিফলন।

Leave a comment