উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল এখন সামনে আসতে শুরু করেছে এবং রাজনৈতিক চিত্র ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের জেলা পঞ্চায়েতের মোট ৩৫৮টি আসনের মধ্যে ২০০টিরও বেশি আসনে বিজেপি এবং বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা দুর্দান্ত জয়লাভ করেছেন।
BJP: উত্তরাখণ্ডে সম্প্রতি সমাপ্ত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৫-এর ফলাফল আবারও রাজ্যের জনগণের আগ্রহকে স্পষ্ট করে দিয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং এর সমর্থিত প্রার্থীরা এই নির্বাচনে ২০০টির বেশি আসনে জয়লাভ করে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। মোট ৩৫৮টি জেলা পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে রাজ্যে পার্টির ভিত মজবুত রয়েছে।
বিজেপি কীভাবে এত বড় জয় পেল?
উত্তরাখণ্ডের জনগণ এবার গ্রাম পঞ্চায়েত, ক্ষেত্র পঞ্চায়েত এবং জেলা পঞ্চায়েত—এই তিনটি স্তরেই বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীদের সমর্থন করেছে। এই জয়ের পেছনে বেশ কয়েকটি নীতিগত এবং জনহিতকারী সিদ্ধান্তের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, যা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির নেতৃত্ব শৈলীর সঙ্গে জড়িত। বিজেপির জয়ের প্রধান কারণ:
- কর্মসংস্থান সৃষ্টি: রাজ্য সরকার এক লক্ষেরও বেশি যুবককে কর্মসংস্থান দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে, যার প্রভাব গ্রামীণ এলাকাতেও দেখা যাচ্ছে।
- হোমস্টে প্রকল্প ও স্বরোজগার: বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে হোমস্টে প্রকল্প এবং স্বরোজগার প্রকল্পের বিস্তার যুবক এবং মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করছে।
- মহিলা ক্ষমতায়ন: বিজেপি সরকার কর্তৃক মহিলা সুরক্ষা, সম্মান এবং স্বাবলম্বনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যার ফলে মহিলা ভোটারদের মধ্যে বিজেপির প্রতি আস্থা বেড়েছে।
- চারধাম যাত্রার সফল ব্যবস্থাপনা: ২০২৫-এর চারধাম যাত্রায় রেকর্ড সংখ্যক তীর্থযাত্রীর আগমন হয়েছে এবং সরকার তাঁদের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।
- দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব: বিজেপি সরকার রাজ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করেছে। সময়ে সময়ে নেওয়া কার্যকর পদক্ষেপগুলি প্রশাসনে স্বচ্ছতা বাড়িয়েছে।
নির্দল প্রার্থীদের বিজেপিকে সমর্থন
যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীরা নির্দলীয়ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবুও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন এই নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজেপির অনেক সমর্থিত প্রার্থী স্বতন্ত্র নির্বাচনী প্রতীকে জয়লাভ করেছেন, এবং এখন তাঁরা প্রকাশ্যে বিজেপির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত থাকার কথা জানাচ্ছেন। নির্বাচনের ফলাফল এটিও দেখায় যে অনেক নির্দল প্রার্থী যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাঁরা প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করার ঘোষণা দিয়েছেন, যার ফলে পঞ্চায়েত স্তরে পার্টির সাংগঠনিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই নির্বাচনে কংগ্রেস সমর্থিত ৮৩ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, যা এটা প্রমাণ করে যে পার্টি রাজ্যে শক্তিশালীভাবে ফিরে আসার জন্য এখনও সংগ্রাম করছে। একই সময়ে অনেক নির্দল প্রার্থীকেও কংগ্রেস থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা গেছে।