BJP Bengal Crisis: বিধানসভা ভোটের আগেই বঙ্গ বিজেপিতে দেখা দিয়েছে মতভেদ। তমলুকের সাংসদ অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় প্রকাশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় দলজুড়ে শোরগোল। শুক্রবার রাতে কোর কমিটির জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অভিজিতের ক্ষোভ সামলাবেন সুনীল বনসল, ভূপেন্দ্র যাদব এবং শমীক ভট্টাচার্য। লক্ষ্য— ক্ষোভ প্রশমিত করে দলে ঐক্য ফেরানো, যাতে ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে বিভাজনের ছবি না ছড়ায়।

অভিজিতের বিস্ফোরক মন্তব্যে চাপে বিজেপি
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের অবস্থান নিয়েই অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষোভ। তিনি মনে করেন, দিল্লি সত্যিই যদি বাংলার রাজনৈতিক পরিবর্তন চাইত, তবে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারত। তাঁর এই প্রকাশ্য মন্তব্যে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কার্যত অনাস্থা প্রকাশ পেয়েছে, যা রীতিমতো অস্বস্তি তৈরি করেছে বিজেপির অন্দরে।বিজেপির নেতারা মনে করছেন, এই মন্তব্য ভোটের মুখে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। নিচুতলার কর্মীদের একাংশ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের প্রতি অসন্তুষ্ট, তাই দলকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মত কোর কমিটির সদস্যদের একাংশের।
জরুরি বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ
শুক্রবার রাতে বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্য ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা— সুনীল বনসল, ভূপেন্দ্র যাদব এবং অমিত মালব্য। আলোচনার মূল বিষয় ছিল, অভিজিতের বক্তব্যের অভিঘাত কী হতে পারে এবং কীভাবে পরিস্থিতি সামলানো যায়।বৈঠকে ঠিক হয়, কেন্দ্রীয় নেতারাই সরাসরি অভিজিতের সঙ্গে কথা বলবেন। শমীক ভট্টাচার্যও আলাদা করে যোগাযোগ করবেন তাঁর সঙ্গে, যাতে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয় এবং দলের ভিতরে ঐক্যের বার্তা যায়।

দলীয় শৃঙ্খলা বনাম ভাবাবেগ— দ্বিধায় পদ্ম শিবির
কোর কমিটির একাংশের মত, টিভি চ্যানেলে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ। এই আচরণে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে দলের অন্য নেতারাও একই পথে হাঁটতে পারেন। অন্য অংশের বক্তব্য, অভিজিতের বক্তব্যে কিছুটা সত্যতা আছে— নিচুতলার কর্মীদের মধ্যেও কেন্দ্রের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।তাই কড়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিলে উল্টো প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা ভোটের আগে বিজেপির জন্য নতুন বিপদ ডেকে আনবে বলে মনে করছে ওই অংশ।
শীর্ষ নেতৃত্বের কৌশল— সংলাপেই সমাধান
দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, বিজেপির লক্ষ্য অভিজিতকে শাস্তি দেওয়া নয়, বরং তাঁর মনে থাকা সংশয় দূর করা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে, অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় যেন বুঝতে পারেন— বিজেপি গণতান্ত্রিক উপায়ে তৃণমূলকে পরাজিত করতে বদ্ধপরিকর।অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “সম্ভবত কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, আমি কথা বলব অভিজিৎবাবুর সঙ্গে।

বিধানসভা ভোটের মুখে পদ্ম শিবিরে শুরু হয়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় প্রকাশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অস্বস্তিতে দল। ক্ষোভ প্রশমনে তৎপর হয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, অভিজিতের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা।












