বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারস আইপিও: ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খোলা, জানুন সম্পূর্ণ তথ্য

বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারস আইপিও: ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খোলা, জানুন সম্পূর্ণ তথ্য

বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারসের ২৩১.৬৬ কোটি টাকার আইপিও ২৪ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খোলা রয়েছে। সংস্থাটি ইস্পাত পণ্য এবং ট্র্যাক্টরের ইঞ্জিন সরবরাহ করে। আইপিও থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ১৭৩.৭৫ কোটি টাকা ওয়ার্কিং ক্যাপিটালে এবং বাকি কর্পোরেট উদ্দেশ্যগুলিতে ব্যয় করা হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সংস্থার মুনাফা স্থিতিশীল ছিল, তবে ঋণ ক্রমাগত বেড়েছে।

BMW Ventures IPO: বিহারের ইস্পাত ও ট্র্যাক্টর ইঞ্জিন সংস্থা বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারসের ২৩১.৬৬ কোটি টাকার আইপিও ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাবস্ক্রিপশনের জন্য খোলা রয়েছে। আইপিওর অধীনে কেবল নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে এবং শেয়ারের মূল্য ৯৪-৯৯ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। সংস্থার আইপিও থেকে সংগৃহীত অর্থের প্রধান অংশ ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য এবং বাকি অংশ কর্পোরেট উদ্দেশ্যগুলির জন্য ব্যবহার করা হবে। বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারস বিহারের ২৯টি জেলায় ১,২৯৯ ডিলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবসা করে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মুনাফা স্থিতিশীল থাকলেও ঋণের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।

গ্রে মার্কেট প্রিমিয়াম (GMP)

বর্তমানে বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারসের শেয়ারের জন্য গ্রে মার্কেটে কোনো বিশেষ কার্যকলাপ নেই। জিএমপি অর্থাৎ গ্রে মার্কেট প্রিমিয়াম শূন্য রেকর্ড করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগকারীদের উচিত গ্রে মার্কেটের সংকেতগুলির উপর বেশি নির্ভর না করে সংস্থার মৌলিক বিষয়গুলি এবং আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ করা। এতে তাদের দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে স্থিতিশীল এবং নিরাপদ লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।

এই আইপিও ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এবং এটি ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিনিয়োগকারীদের এই সময়ের মধ্যে তাদের বিড জমা দিতে হবে। আইপিওতে শেয়ার বরাদ্দ ২৯ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত করা হবে। এরপরে, ১ অক্টোবর থেকে এই শেয়ারগুলি বিএসই এবং এনএসই উভয় স্টক এক্সচেঞ্জেই তালিকাভুক্ত হবে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এই সময়সীমা গুরুত্বপূর্ণ কারণ বরাদ্দের পরেই তারা তাদের শেয়ারের অবস্থা জানতে পারবেন এবং ট্রেডিং শুরু করতে পারবেন।

আইপিওতে ইস্যুকৃত শেয়ার

এই আইপিও-র অধীনে কেবল নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে। এর মানে হল, কোনো অফার ফর সেল (OFS) উইন্ডো থাকবে না এবং সংস্থা তার শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে শেয়ার বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে না। সমস্ত শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য নিশ্চিত করে যে তারা সরাসরি সংস্থার সম্প্রসারণ এবং উন্নয়নে অংশ নিচ্ছেন।

রেজিস্ট্রার এবং বরাদ্দ

আইপিও-র রেজিস্ট্রার হল ক্যামিও কর্পোরেট সার্ভিসেস। বিনিয়োগকারীরা বরাদ্দের পরে ক্যামিওর ওয়েবসাইট বা বিএসইর ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের বরাদ্দকৃত শেয়ারের অবস্থা দেখতে পারেন। এই প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ এবং সহজ, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ এবং বরাদ্দের অবস্থা সম্পর্কে সহজে তথ্য পান।

আইপিওর অর্থ ব্যবহার

বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারস এই আইপিওর মাধ্যমে মোট ২৩১.৬৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করার লক্ষ্য রাখছে। এর মধ্যে ১৭৩.৭৫ কোটি টাকা ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রয়োজন মেটাতে ব্যয় করা হবে। বাকি অর্থ সংস্থা সাধারণ কর্পোরেট উদ্দেশ্যগুলির জন্য ব্যবহার করবে। এর অর্থ হল, সংস্থা তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম, সম্প্রসারণ এবং নতুন প্রকল্পগুলির জন্য তহবিল সুরক্ষিত করছে।

সংস্থার পরিচিতি

বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারস ইস্পাত পণ্য, ট্র্যাক্টর ইঞ্জিন এবং খুচরা যন্ত্রাংশের ব্যবসায় নিয়োজিত একটি প্রধান সংস্থা। এই সংস্থা পিভিসি পাইপ, রোল ফর্মিং, প্রি-ইঞ্জিনিয়ার্ড বিল্ডিংস এবং ইস্পাত গার্ডার তৈরি করে। এর ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কে বিহারের ২৯টি জেলায় মোট ১,২৯৯ জন ডিলার অন্তর্ভুক্ত। এই বিস্তৃত ডিলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংস্থা তার পণ্যগুলি বৃহৎ আকারে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়।

পণ্যের পোর্টফোলিও

সংস্থার পণ্যের পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং ব্যাপক। বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারস টিএমটি রড, জিআই শিট, এইচআর শিট, ওয়্যার রড, গ্যালভানাইজড কালার কোটেড শিট, দরজা, জিপি শিট, পাইপ, হলো সেকশন, স্ক্রু এবং অন্যান্য ইস্পাত পণ্য বিক্রি করে। এছাড়াও, সংস্থা বিহারে ট্র্যাক্টর ইঞ্জিনের বিতরণও করে। সংস্থার ছয়টি স্টক ইয়ার্ড রয়েছে, যার মধ্যে একটি পূর্ণিয়াতে এবং পাঁচটি পাটনায় অবস্থিত। এই বিস্তৃত নেটওয়ার্ক এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্যের পোর্টফোলিও বাজারে সংস্থার শক্তি এবং বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।

আর্থিক অবস্থা

বিএমডব্লিউ ভেঞ্চারসের আর্থিক অবস্থায় কিছু উত্থান-পতন দেখা গেছে। ২০২৩ অর্থবর্ষে সংস্থার নিট মুনাফা ছিল ৩২.৬৬ কোটি টাকা। ২০২৪ অর্থবর্ষে এটি কমে ২৯.৯৪ কোটি টাকা হয়েছিল, তবে ২০২৫ অর্থবর্ষে মুনাফা বেড়ে ৩২.৮২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। একইভাবে, সংস্থার মোট আয়ও পরিবর্তিত হয়েছে। ২০২৩ সালে মোট আয় ছিল ২,০১৮.১২ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালে কমে ১,৯৪২.০৩ কোটি টাকা হয়েছে, তবে ২০২৫ সালে এটি বেড়ে ২,০৬৭.৩৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এই তথ্যগুলি ইঙ্গিত করে যে সংস্থা বাজারের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তার আয় এবং মুনাফা বাড়াতে সফল হয়েছে।

সংস্থার উপর ঋণের বোঝা ক্রমাগত বেড়েছে। ২০২৩ অর্থবর্ষের শেষে ঋণ ছিল ২৮৩.৫৮ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ৩৯৫.৩০ কোটি টাকা এবং ২০২৫ সালে ৪২৮.৩৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। যদিও ঋণের অবস্থার প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, তবে বিনিয়োগকারীরা সংস্থার শক্তিশালী মৌলিক বিষয় এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

Leave a comment