পাকিস্তানের বিমান হামলায় ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত: খাইবার পাখতুনখোয়া’র তিराह উপত্যকায় ভয়াবহ ঘটনা

পাকিস্তানের বিমান হামলায় ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত: খাইবার পাখতুনখোয়া’র তিराह উপত্যকায় ভয়াবহ ঘটনা

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী খাইবার পাখতুনখোয়া’র তিराह উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে ৩০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, রাত আনুমানিক ২টায় এই হামলা চালানো হয়। যাতে অনেকে আহত হয়েছেন এবং অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন। 

PAK News: পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের নিজেদের দেশের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের তিराह উপত্যকার একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়ে ৩০ জনেরও বেশি নিরীহ নাগরিকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এই হামলায় নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, রাত আনুমানিক ২টায় পাকিস্তানি বিমানবাহিনী জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান থেকে কমপক্ষে আটটি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে।

বোমাবর্ষণের ভয়াবহতা

হামলায় গ্রামের একটি বড় অংশ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে এবং চারদিকে ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, লোকজন ঘুমাচ্ছিল, তখনই হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বোমাবর্ষণ এতটাই তীব্র ছিল যে গ্রামের গলি ও রাস্তাঘাট ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপে ভরে গেছে।

নিহত ও আহতদের অবস্থা

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় ৩০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ২০ জনেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপ এবং বিধ্বস্ত কাঠামোর কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে গুরুতর অসুবিধা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া

গ্রামের বাসিন্দারা এই হামলায় হতবাক। অনেকেই জানিয়েছেন যে তাঁরা তাদের সন্তানদের এবং পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে দৌড়াতে দেখেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই হামলা শুধুমাত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের নামে করা হয়নি, বরং এটি পাকিস্তানের নিজস্ব সেনাবাহিনী দ্বারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে চালানো সবচেয়ে নিষ্ঠুর পদক্ষেপগুলির মধ্যে একটি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হামলার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষ, আহতদের আর্তনাদ এবং সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া গ্রামের দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওগুলিতে মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগও প্রতিফলিত হয়েছে। অনেক সংস্থা পাকিস্তানের কাছে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

নিখোঁজদের সন্ধান চলছে 

বোমাবর্ষণের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে অনুসন্ধান ও ত্রাণ কাজে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। পাকিস্তানে নিজেদের নাগরিকদের উপর চালানো এই নিষ্ঠুর বিমান হামলা (airstrike) নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। এই ঘটনাটি এই অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তথাকথিত 'সন্ত্রাসবিরোধী' অভিযানের নামে চলা বর্বরতার আরও একটি উদাহরণ তুলে ধরেছে।

Leave a comment