মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ বৃহস্পতিবার বিধান পরিষদে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, তফসিলি জাতি (এসসি)-র শংসাপত্র এখন থেকে শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখ ধর্মের অনুসারীদের জন্যই বৈধ হবে। অন্য কোনও ধর্মের ব্যক্তি যদি এসসি শংসাপত্র পেয়ে থাকেন, তবে তা বাতিল করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, তফসিলি জাতির অধীনে সরকারি চাকরি, সংরক্ষণ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা শুধুমাত্র এই তিনটি ধর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই পাবেন। যদি কোনও ব্যক্তি মিথ্যা শংসাপত্রের ভিত্তিতে সরকারি সুবিধা নিয়ে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাচনও বাতিল হতে পারে
মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীশ আরও বলেন, যদি কোনও ব্যক্তি এসসি সার্টিফিকেট ব্যবহার করে নির্বাচনে জেতেন, কিন্তু তিনি অন্য কোনও ধর্মের অনুসারী হন, তবে তার নির্বাচনও বাতিল করা হবে।
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা অমিত গোরখেও গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, কিছু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী পরিচয় গোপন করে, ধর্মীয় স্বাধীনতার অপব্যবহার করে এসসি সংরক্ষণের অবৈধ সুবিধা নিচ্ছেন। গোরখের দাবি, এই ধরনের মানুষ লোক দেখানোর জন্য তফসিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত হলেও গোপনে অন্য ধর্ম পালন করেন, যা নিয়মের লঙ্ঘন।
ধর্মান্তরের ক্রমবর্ধমান ঘটনা উদ্বেগের কারণ
মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীশ স্বীকার করেছেন যে রাজ্যে ধর্মান্তরের ঘটনা ক্রমাগত ঘটছে, বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ এর শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখরাই এসসি সংরক্ষণের যোগ্য।
ফড়নবীশ বলেন, যদি কাউকে জোর করে, প্রলোভন দেখিয়ে বা প্রতারণার মাধ্যমে ধর্মান্তর করা হয়, তবে তা শুধু সংবিধান নয়, আইনেরও পরিপন্থী। এই ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন এবং বলেন যে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে।
জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণে বিরতি
মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীশ বিধান পরিষদে আরও জানান যে, রাজ্যে প্রতারণা ও চাপের মাধ্যমে ধর্মান্তরের ঘটনার অভিযোগ দ্রুত বাড়ছে। এই ধরনের ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য সরকার এখন কঠোর আইনি বিধান আনার কথা বিবেচনা করছে।
এর অধীনে, পুলিশের মহানির্দেশকের সভাপতিত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের এই ধরনের ধর্মান্তর মোকাবিলা করার জন্য আইনকে আরও কঠোর করার পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কমিটি তাদের রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দিয়েছে, যা এখন অধ্যয়ন করে শীঘ্রই আইনে পরিবর্তন আনা হবে।