ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানো :অনেকেই মনে করেন পেটের মেদ কমাতে ব্যায়াম একমাত্র সমাধান। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার সঠিক নিয়ন্ত্রণেই পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমানো সম্ভব। ড. কাথালাগিরি জানাচ্ছেন, ব্যায়াম না করলেও সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পানি খাওয়া, ঘুমের নিয়ম, চাপ কমানো এবং কিছু ঘরোয়া অভ্যাস মেনে চললেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
প্রোটিন খাওয়ার গুরুত্ব
প্রোটিন হলো শরীরের শক্তির মূল ভিত্তি। ডিম, লিন মিট, মটরশুঁটি ও টোফুর মতো খাবার পেট ভরিয়ে রাখে এবং ক্ষুধা কমায়। হার্ভার্ড হেলথ অনুযায়ী, প্রোটিন গ্রহণের জন্য দৈনিক ০.৩৬ গ্রাম প্রতি পাউন্ড শরীরের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
দ্রবণীয় ফাইবারে ভরপুর খাদ্য
ওটস, অ্যাভোকাডো, ফ্ল্যাকসিড এবং লেগিউমের মতো দ্রবণীয় ফাইবার পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। এটি পানি শোষণ করে জেলি-সদৃশ পদার্থ তৈরি করে, যা পাচন ধীর করে এবং চর্বির শোষণ কমায়।
চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এড়িয়ে চলুন
চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়, প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাকস, সাদা রুটি ও পাস্তা পেটের চর্বি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, এগুলি কমিয়ে প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ করা।
পানি পান করুন, হাইড্রেটেড থাকুন
প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান শরীরের টক্সিন বের করে, পাচন সমর্থন করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অতিরিক্ত পানি পান করলে সামান্য হলেও ওজন কমতে সাহায্য করে।
পোর্শন সাইজ নিয়ন্ত্রণ
খাবারের পরিমাণ ছোট করুন। ছোট প্লেটে খাবার খেলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
ঘুমের পর্যাপ্ততা
রাতে ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘুমের অভাব হলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের হরমোন বিঘ্নিত হয়।
চাপ কমানো
চাপ বেশি থাকলে কোর্টিসল হরমোন বৃদ্ধি পায়, যা পেটের চর্বি জমায়। সঙ্গীত, মেডিটেশন, গভীর শ্বাস প্রশ্বাস বা জার্নালিংয়ের মাধ্যমে চাপ কমানো সম্ভব।
স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ
বাদাম, বীজ, অলিভ অয়েল ও অ্যাভোকাডো খেলে ক্ষুধা কমে এবং ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। ট্রান্স ফ্যাট এড়াতে হবে।
রাতের খাবার নিয়ন্ত্রণ
ঘুমের আগে বড় ডিনার না খেলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং চর্বি জমার সম্ভাবনা কমে।
খাবার ধীরে ধীরে চিবান
খাবার দ্রুত খেলে অতিরিক্ত খাওয়া হয়। ধীরে ধীরে চিবালে পূর্ণ হওয়ার অনুভূতি পাওয়া যায়।
অ্যালকোহল কম খাওয়া
অ্যালকোহল উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত এবং চর্বি সঞ্চয় বাড়ায়। পরিমিত বা একদম পরিহার করুন।
সবুজ চা পান করুন
সবুজ চায়ে থাকা ক্যাটেচিন মেটাবলিজম বাড়ায় এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিয়মিত পান করলে ফলাফল দ্রুত দেখা যায়।
ড. কাথালাগিরি বলেন, ব্যায়াম না করলেও এই ১৩টি সহজ অভ্যাস মেনে চললে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব। খাদ্য, পানি, ঘুম, চাপ এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখাই মূল চাবিকাঠি।