ইসরায়েলি বন্দরে বাণিজ্য করা কোম্পানিগুলোকে হুথিদের হুঁশিয়ারি

ইসরায়েলি বন্দরে বাণিজ্য করা কোম্পানিগুলোকে হুথিদের হুঁশিয়ারি

হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলি বন্দরে বাণিজ্য করা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করেছে। তারা বলেছে, এই সতর্কতা উপেক্ষা করা হলে যেকোনো দেশের জাহাজে হামলা করা হবে।

Isreal-Hamas War: ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য করা সমস্ত বিশ্বব্যাপী কোম্পানিকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, যে কোম্পানিগুলো ইসরায়েলি বন্দরের সঙ্গে যুক্ত জাহাজ পাঠাবে বা সমর্থন করবে, তাদের জাহাজগুলোর উপর হামলা করা হবে। এটি হুথি বিদ্রোহীদের ইসরায়েল বিরোধী অভিযানের চতুর্থ পর্যায়। তারা দাবি করেছে, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন না থামা পর্যন্ত তাদের এই অভিযান চলবে।

হুথিদের হুমকি

ইয়েমেনে সক্রিয় ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা আবারও মধ্যপ্রাচ্যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। রবিবার, হুথি মুখপাত্র একটি টেলিভিশন বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে, এখন থেকে তারা সেই সমস্ত কোম্পানির জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করবে, যা ইসরায়েলি বন্দরের সঙ্গে বাণিজ্য করে।

হুথিরা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা কোনো দেশের জাহাজকেই রেহাই দেবে না, যদি সেটি ইসরায়েলি বন্দরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই বিবৃতিটি হুথিদের সেই কৌশলগত সামরিক অভিযানের অংশ, যা অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলছে। হুথি বিদ্রোহীরা এটিকে 'ইসরায়েল বিরোধী সামরিক মিশনের' চতুর্থ পর্যায় বলছে।

বৈশ্বিক কোম্পানিগুলোকে চূড়ান্ত সময়সীমা

হুথি মুখপাত্র তার টেলিভিশন বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যে কোম্পানিগুলো এখনও পর্যন্ত তাদের সতর্কতাকে উপেক্ষা করেছে, তারা যেন গুরুতর পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকে। মুখপাত্র বলেছেন, "যদি কোনো কোম্পানি আমাদের আদেশ অমান্য করে এবং ইসরায়েলি বন্দরের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যায়, তাহলে আমরা তাদের জাহাজগুলোকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করব, তা তারা যে দেশেরই হোক না কেন।"

হুথি বিদ্রোহীরা বর্তমানে ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে এবং লোহিত সাগর, বাব-আল-মান্দেব প্রণালীর মতো কৌশলগত অঞ্চলগুলোতে তাদের সক্রিয়তা ক্রমাগত বাড়ছে। এই এলাকাগুলোর মধ্যে দিয়েই বিশ্বের একটি বড় সমুদ্র বাণিজ্য চলে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের হুমকিকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না।

হুথিদের দাবি: গাজায় হামলা বন্ধ করুক ইসরায়েল

হুথি মুখপাত্র আরও স্পষ্ট করেছেন যে, গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং সেখানকার অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের ইসরায়েল বিরোধী অবস্থান বজায় থাকবে। তিনি বলেন, ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বের সকল দেশের কাছে আবেদন জানাচ্ছে, তারা যেন ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করে, যাতে ফিলিস্তিনিদের উপর চলমান হামলা বন্ধ করা যায়।

আমেরিকা-হুথি চুক্তি ও ইসরায়েলের উপেক্ষা

মে ২০২৫-এ আমেরিকা ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি অস্থায়ী চুক্তি হয়েছিল, যেখানে এটি স্থির হয়েছিল যে, আমেরিকা হুথিদের বিরুদ্ধে তাদের বোমা হামলা অভিযান বন্ধ করবে এবং এর বিনিময়ে হুথিরা লোহিত সাগরে জাহাজগুলোর উপর হামলা বন্ধ করবে। তবে, হুথিরা এই চুক্তিতে স্পষ্ট জানিয়েছিল যে, ইসরায়েল এর বাইরে থাকবে।

অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া সামরিক অভিযান

গাজায় ইসরায়েল কর্তৃক শুরু হওয়া সামরিক অভিযানের পর থেকে হুথি বিদ্রোহীরা তাদের সামরিক অপারেশনকে "ফিলিস্তিনি সংহতি"-এর নামে আরও জোরদার করেছে। তারা ক্রমাগত সেই জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে, যেগুলোকে তারা ইসরায়েলি স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত মনে করে। এই সময়কালে, বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার কারণে অনেক বিশ্বব্যাপী শিপিং কোম্পানি তাদের পথ পরিবর্তন করেছে বা সাময়িকভাবে পরিষেবা স্থগিত করেছে।

Leave a comment